স্বাধীনতাপূর্ব বাংলাদেশের রেশম শিল্পের প্রেক্ষাপট
- ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পূর্ব হতে বৃহত্তর রাজশাহী ও বগুড়া জেলায় দু’টি রেশম বীজাগার ছিল এবং সে সময় হইে এ অঞ্চলে রেশমের চাষাবাদ হতো। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আবহাওয়া এবং জমি রেশম চাষের উপযোগী হওয়ায় তদানীন্তন পাকিস্তান আমলে দেশের এ অঞ্চলে রেশম চাষের সম্প্রসারণ ঘটে৷
- রেশম বীজাগার থেকে চাষীগণকে রেশম পোকার বীজ সরবরাহ করা হতো৷ চাষীরা এ বীজ থেকে রেশম পোকার ডিম এবং ডিম থেকে রেশম গুটি উত্পাদন করতো৷
- এ শিল্পের সাথে জড়িত রেশম চাষীরা রেশম গুটি থেকে রেশম সুতা উত্পাদন করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ ও ভোলাহাট এবং ঢাকা জেলার মীরপুরে তাঁতীদের নিকট বিক্রি করতো ৷
- তাঁতীরা সে সময় এসব স্থানে হস্তচালিত তাঁ তের মাধমে রেশম বস্ত্র উত্পাদন করে স্থানীয় বাজারে এবং পশ্চিম পাকিস্তানে বিক্রি করতো ৷
- ১৯৫৯-৬০ সাল পর্যন্ত রেশম সম্প্র্রসারণের কাজ এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল ৷
রাজশাহী রেশম কারখানার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
- ১৯৫৯-৬০ সালে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের নিয়ন্ত্রণে রাজশাহী রেশম কারখানা স্থাপিত হয়৷
- ১৯৬১ সালে মডেল কারখানা হিসেবে মূলতঃ নিম্নোক্ত ৩টি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে এর কার্যক্রম পরিচালনা শুরু হয়ঃ
(১) রেশম চাষীদের নিকট হতে নগদ মূল্যে রেশম গুটি ক্রয় ৷
(২) রেশম গুটি থেকে শক্তিচালিত তাঁ তে ব্যবহারপযোগী সুতা উৎপাদন, রেশম বস্ত্র তৈরী ও বাজারজাতকরণ ৷
(৩) রেশম চাষীগণকে প্রয়োজনে ভর্র্তূকী প্রদান ৷
- ১৯৭৭ সালে রেশম বোর্ড স্থাপিত হলে এ কারখানাটি রেশম বোর্ডের নিকট হস্তান্তর হয়। প্রাথমিক অবস্থায় এ কারখানাটিতে ১০০টি রিলিং মেশিন, ২৩টি শক্তি চালিত তাঁত ও ১০টি হস্তচালিত তাঁত স্থাপন করে রেশম শিল্পের সস্প্রসারণের জন্য প্রমোশোনাল ইউনিট হিসেবে চালু করা হয়৷
- ১৯৭৪ থেকে ১৯৮০ সালে বিএমআরই প্রকল্পের অধীন ১০০টি রিলিং বেসিনকে ২০০টিতে এবং ২৩টি শক্তিচালিত তাঁতকে ৪৩টিতে উন্নীত করা হয়৷
- ১৯৮০ সালে কোনরুপ আবর্তক তহবিলের সংস্থান না রেখেই এটিকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালনার নির্দেশ দিলে রেশম বোর্ডের উন্নয়ন খাত হতে প্রতি বৎসর অর্থের যোগান দিয়ে কারখানাটি চালু রাখা হয়৷
- ১৯৯৫ হতে ১৯৯৯ সালে বিএমআরই প্রকল্পের অধীন ৫৬৫.৯০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে কারখানাটির ভবন বর্দ্ধিতকরণ সহ অতিরিক্ত ২০টি শক্তিচালিত তাঁত ও ১০টি হস্তচালিত তাঁত এবং অন্যান্য যম্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়৷
- ক্রমাগত লোকসানসহ নানাবিধ কারণে ২০০২ সালের ৩০,নভেম্বর কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করে কর্মরত ২৭২ জন জনবলকে গোল্ডেন হ্যান্ডসেকের মাধ্যমে চাকুরী হতে অব্যাহতি প্রদান করা হয়৷
রাজশাহী রেশম কারখানা বন্ধ ঘোষণার প্রেক্ষাপট
- বিসিক এর নিকট হতে রেশম বোর্ডের নিকট রেশম কারখানাটি হস্তান্তরের সময় হতেই প্রয়োজনের অতিরিক্ত জনবল ছিল।
- কারখানার উত্পাদন চালু রাখার জন্য রেশম গুটি ক্রয়, রং ও রাসায়নিক দ্রব্যাদি ক্রয়, বিদ্যুৎ বিল সহ অন্যান্য আনুসংগিক খরচ এবং শ্রমিক মজুরী পরিশোধ সংক্রান্ত ব্যয় রেশম বোর্ড হতে ঋণ নিয়ে অথবা সরকারের নিকট হতে ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে নির্বাহ করা হয়েছে ৷ কারখানার আয় হতে এ সমস্ত ব্যয় কখনই পুরোপুরি নির্বাহ করা সম্ভব হয়নি ৷
- একদিকে কারখানার উৎপাদন কখনই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি অন্য দিকে উৎপাদিত পণ্য বহুলাংশে অবিক্রিত থেকে গেছে৷ ফলে কারখানাটি লোকসানমূখী হয়ে বিশাল অংকের দেনার সম্মূখীন হয়ে পড়ে৷
- ২০০২ সালের ফেব্রুয়ারী মাস হতে রেশম কারখানাটি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে যে আর্থিক সংকটের কারণে উৎপাদন একেবারে বন্ধ হয়ে যায় এবং শ্রমিকদের মজুরী পরিশোধ করতে অক্ষম হয়ে পড়ে৷ এ অবস্থায় সরকারী সিদ্ধান্তে কারখানাটি বন্ধ ঘোষিত হয় ৷
ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
- বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৭৬ সালে যুদ্ধত্তোর জনগণের বিশেষ করে অসহায় মহিলা ও পুরুষদের পূর্নবাসন ও কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে একটি বেসরকারী সংস্থা RDRS কর্তৃক ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয়৷
- ১৯৮১ সালের ৩০ জুন সরকারী সিদ্ধান্তে অলাভজনক ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানাটি রেশম বোর্ডের নিকট হস্তান্তরিত হয়৷
- এ সময় কারখানাটিতে ২০টি রিলিং বেসিন, ৩টি শক্তিচালিত তাঁত, ১৯টি হস্তচালিত তাঁত ও আনুসংগিক যন্ত্রপাতি সংস্থাপিত ছিল ৷
- কারখানাটির চলতি মুলধন না থাকায় কারখানা পরিচালনার যাবতীয় অর্থ বোর্ডের উন্নয়ন তহবিল থেকে ঋণ হিসেবে প্রদান করা হয়েছে৷
- ১৯৯৬ হতে ১৯৯৯ সালে ১৬৩.৫৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বিএমআরই প্রকল্পের অধীনে কারখানাটির ভবন বর্দ্ধিতকরণসহ অতিরিক্ত ২০টি শক্তিচালিত তাঁতসহ কিছু আনুসঙ্গিক যন্ত্রপাতি সংস্থাপিত হয়৷ কিন্তু আবর্তক তহবিলের অভাবসহ নানাবিধ কারণে কারখানাটি পরিচালনা সম্ভব হয়নি৷
- ২০০২ সালের ৩০ নভেম্বর কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করে কর্মরত ৮৬ জন জনবলকে গোল্ডেন হ্যান্ডসেকের মাধ্যমে চাকুরী হতে অব্যাহতি প্রদান করা হয় ৷
ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানা বন্ধ ঘোষণার প্রেক্ষাপট
- রেশম কারখানাটির উত্পাদন কখনই লক্ষ্যমাত্রায় পৌছতে পারেনি৷
- কারখানা হতে আয় দ্বারা কখনই ব্যয় নির্বাহ করা সম্ভব হয়নি৷ ফলে এটি একটি লোকসানমূখী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়ে পড়ে৷
- কারখানাটিতে ফেব্রুয়ারী’২০০২ হতে নভেম্বর’২০০২ পর্যন্ত ১০ মাস শ্রমিকরে মজুরী প্রদান সম্ভব হয়নি৷
- এ পর্যায়ে সরকারী সিদ্ধান্তে কারখানাটি বন্ধ ঘোষিত হয় ৷
রাজশাহী ও ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানা দু’টি লোকসানমূখী হয়ে পড়ার কারণ সমূহ
- কারখানা ২টি বাণিজ্যিকভাবে পরিচালনার জন্য কোন সময়েই প্রয়োজনীয় ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল দেয়া হয়নি৷ ফলে কাঁচামাল সংগ্রহ করে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো সম্ভব হয়নি৷
- কোন সময়ে ঋণ আকারে অর্থ বরাদ্দ করা হলেও সিদ্ধান্তে দীর্ঘ সূত্রিতা, অর্থ ছাড়ে বিলম্ব ইত্যাদির কারণে ঐ অর্থ কাংখিত লক্ষ্যে পুরোপুরি ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি৷ অনেক সময় ঐ অর্থ থেকে বিরাজমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের বেতন মজুরী বাবদ ব্যয় করতে হয়েছে৷
- লক্ষ্যমাত্রা স্থির ব্যতিরেকে উৎপাদন, উৎপাদিত পণ্যের অপর্যাপ্ত বিপণন ব্যবস্থা, বিপণনে মন্থরগতি৷
- বস্ত্রের উৎপাদন ব্যয় অধিক হওয়ায় বিপণনে বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে অসম প্রতিযোগিতা৷
- উৎপাদিত বস্ত্রের বাজার সৃষ্টির জন্য ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা না থাকা, বস্ত্র বিক্রির জন্য দক্ষ কর্মীর অভাব এবং যথেষ্ট বিক্রয় কেন্দ্র না থাকা।
- বিদেশী কৃত্রিম রেশম বস্ত্রে বাজার দখলের ফলে কারখানা দু’টির উৎপাদিত বস্ত্রের চাহিদা কমে যাওয়া৷
- কারখানা ব্যবস্থাপনার নগদ ক্রয় ক্ষমতার সীমাবদ্ধতার কারণে সরকারী নিয়মনীতি পালন করে টেন্ডারে বেশী মূল্যে কাঁচামাল ক্রয়৷
- বেসরকারী কারখানার ন্যায় শ্রমিকদের পিস রেটে মজুরী পরিশোধ না করে IWWPC অনুযায়ী মজুরী পরিশোধ করায় উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়া ৷
- উৎপাদিত পণ্যের উচ্চমূল্য, ডিজাইনের সীমাবদ্ধতা ইত্যাদির কারণে বিপণনের ক্ষেত্রে লক্ষমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় রেশম বস্ত্রের মওজুদ বৃদ্ধির ফলে তারল্য সংকট ও অদক্ষ ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি।
রেশম কারখানা দু’টির উৎপাদন ক্ষমতা
রাজশাহী রেশম কারখানা
উৎপাদন যন্ত্রের নাম
|
সংখ্যা
|
রেটেড ক্যাপাসিটি
(প্রতি বছর/সিফ্ট)
|
ইউজেবল ক্যাপাসিটি
(প্রতি বছর/সিফ্ট)
|
পাওয়ার লুম (পুরাতন)
|
৩৫
|
১,৩১,০৪০ মিঃ
|
৮৭,৩৬০ মিঃ
|
(৬৬.৬৬%)
|
হ্যান্ডলুম (পুরাতন)
|
১২
|
১৬,৩৮০ ”
|
১৩,১০৪ ”
|
(৮০%)
|
রেপিয়ারলুম (বিএমআরই)
|
৮
|
৪৯,২২৪ ”
|
৩৭,৯৩৯ ”
|
(৮০%)
|
সেমি অটো পাওয়ার লুম (বিএমআরই)
|
১১
|
৫১,৪৮০ ”
|
৪১,১৮৪ ”
|
(৮০%)
|
হ্যান্ড লুম (বিএম আরই )
|
১০
|
১০,২৯৬ ”
|
৮,২৩৭ ”
|
(৮০%)
|
মোটঃ
|
৭৬
|
২,৫৮,৪২০ মিঃ
|
১,৮৭,৮২৪ মিঃ
|
(৭৩%)
|
ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানা
উৎপাদন যন্ত্রের নাম
|
সংখ্যা
|
রেটেড ক্যাপাসিটি
প্রতি বছর/সিফ্ট
|
ইউজেবল কাপাসিটি
প্রতি বছর/সিফ্ট
|
পাওয়ার লুম (পুরাতন)
|
২০
|
৯৩,৬০০ মিঃ
|
৭৪,৮৮০ মিঃ
|
(৮০%)
|
হ্যান্ডলুম (পুরাতন)
|
১৬
|
১৮,৭৫০ ”
|
১৫,০০০ ”
|
(৮০%)
|
মোটঃ
|
৩৬
|
১ , ১২,৩৫০ ’’
|
৮৯,৮৮০ ’’
|
(৮০%)
|
রেশম কারখানা দু’টির যন্ত্রপাতির অবস্থা
- রাজশাহী রেশম কারখানার কিছু যন্ত্রপাতি ৫০ বছরে এবং ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানার কিছু যন্ত্রপাতি ৩৫ বছরের পুরাতন৷
- ১৯৯৯ সালে বি এম আর ই প্রকল্পের অধীন রাজশাহী ও ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানায় কিছু অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সংস্থাপিত হয়েছে৷
- কারিগরী বিশেষজ্ঞের দ্বারা নমুনা পরীক্ষা করে কিছু কিছু মেশিনে উত্পাদন কার্যক্রম চালানো হয়েছে এবং কিছু মেশিন সংস্থাপনের পর উৎপাদন কাজে ব্যবহার করা হয়নি৷
- মেশিনগুলো লুব্রিকেট দিয়ে এবং পলিথিন দিয়ে ঢেকে সংরক্ষণ করা হচ্ছে ৷
রেশম কারখানা দু’ টির জনবল
কারখানার নাম
|
অনুামোদিত জনবল
|
গোল্ডেন হ্যান্ডসেক/পে-অফ প্রাপ্ত জনবল
|
কর্মকর্তা
|
কর্মচারী
|
শ্রমিক
|
মোট জনবল
|
কর্মকর্তা
|
কর্মচারী
|
শ্রমিক
|
মোট জনবল
|
রাজশাহী রেশম কারখানা
|
১৬
|
৯৩
|
৩৬১
|
৪৭০
|
৯
|
৪১
|
২২২
|
২৭২
|
ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানা
|
৮
|
২৬
|
৭৭
|
১১১
|
৩
|
১৪
|
৬৯
|
৮৬
|
সর্বমোট
|
২৪
|
১১৯
|
৪৩৮
|
৫৮১
|
১২
|
৫৫
|
২৯১
|
৩৫৮
|
- সরকারী সিদ্ধান্তে ৩০/১১/২০০২ তারিখে কারখানা দু’টিকে বন্ধ ঘোষণা করে কর্মরত সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকগণকে গোল্ডেন হ্যান্ডসেকের মাধ্যমে চাকুরী হতে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে এবং ৩০/০৯/২০০৯ তারিখে রেশম কারখানা দু’টির ৫৮১টি পদ বিলুপ্ত করা হয়েছে।
রাজশাহী ও ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানার লাভ ক্ষতির হিসাব
- রাজশাহী ও ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানা জন্মলগ্ন হতে কোন সময়ই লাভজনক ভাবে পরিচালিত হয়নি ।
- ৩০জুন ২০০৭ পর্যন- রাজশাহী রেশম কারখানার মোট লোকসানের পরিমাণ ৩৮ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা এবং একই সময় পর্যন্ত ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানার লোকসানের পরিমান প্রায় ১১ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকা।
রাজশাহী ও ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানার বিগত ৫ বছরের ক্ষতির হিসাব (লক্ষ টাকায়)
অর্থ বছর
|
রাজশাহী রেশম কারখানা
|
ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানা
|
মোট
|
১৯৯৭-৯৮
|
১৪৮.০৫
|
৪৫.৩৩
|
১৯৩.৩৮
|
১৯৯৮-৯৯
|
২১১.৮৫
|
৬৫.৬৬
|
২৭৭.৫১
|
১৯৯৯-২০০০
|
২৩৬.২১
|
৬১.৩০
|
২৯৭.৫১
|
২০০০-২০০১
|
১৬৯.২৪
|
৫৬.৮৯
|
২২৬.১৩
|
২০০১-২০০২
|
২১০.৫৫
|
৫৯.৯৯
|
২৭০.৫৪
|
সর্বমোট
|
৯৭৫.৯০
|
২৮৯.১৭
|
১২৬৫.০৭
|
বন্ধ হওয়ার পর কারখানা সংক্রান্ত বিষয়ে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ
- কারখানা দু’টি বোর্ডের নিয়ন্ত্রণে রেখে সীমিত আকারে পরিচালনার জন্য সরকার কর্তৃক গঠিত কমিটি ১৭.৪৪ কোটি টাকা ঋণ মওকুফ সহ ৩.০০ কোটি টাকা অনুদান প্রদানের সুপারিশ সম্বলিত একটি কর্মপরিকল্পনা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পেশ করেন।
- অর্থ মন্ত্রণালয় প্রস্তাবিত ঋণ মওকুফ না করে ব্লকড্ এ্যাকাউন্টে রেখে ৫ বছরের মরেটরিয়ামসহ ১০ বছরে পরিশোধের জন্য এবং চলতি মুলধনের ৩.০০ কোটি টাকা ব্যাংক হতে ঋণ গ্রহণ করে কারখানা দু’টি পরিচালনার জন্য নির্দেশ দেয়।
- ১১টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের নিকট ঋণ প্রদানের জন্য রেশম বোর্ড হতে প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়। কিন্তু রেশম কারখানা দু’টি লোকসানী প্রতিষ্ঠান হওয়ায় কোন ব্যাংকই ঋণ প্রদানে সম্মত হয়নি।
- ২২/০৩/০৭ তারিখে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে মাননীয় উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় রেশম বোর্ড নিয়ন্ত্রিত রেশম কারখানা দু’টি প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের মাধ্যমে বেসরকারীকরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
- বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় হতে ১০/০৪/০৭ তারিখে রেশম কারখানা দু’টি বেসরকারী করণের জন্য প্রাইভেটাইজেশন কমিশনে তালিকা প্রেরণ করা হলে প্রাইভেটাইজেশন কমিশন কারখানা দু’টির সম্পদ মূল্যায়ন ও দায় দেনা নিরুপন করে বিক্রীর জন্য দু’দফা পত্রিকায় দরপত্র আহবান করে।
- দরপত্রে আশানুরুপ দর না পাওয়ায় ১১/১১/০৮ তারিখে অনুষ্ঠিত প্রাইভেটাইজেন কমিশনের ৪৭তম কমিশন সভায় রাজশাহী ও ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানা দু’টি লীজ প্রদানের কার্যক্রম গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
- প্রইভেটাইজেশন কমিশনের ২৫/০৩/০৯তারিখের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিশনের মাননীয় চেয়ারম্যান (প্রতি মন্ত্রী) ডঃ মির্জা আব্দুল জলিল ০৩/০৮/০৯ তারিখে রাজশাহী রেশম কারখানা পরিদর্শণ করেন।
- ২৫/০৩/০৯ তারিখে ৯ম জাতীয় সংসদের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভায় বন্ধ ঘোষিত রেশম কারখানা দু’টি সরজমিনে পরিদর্শণ করে চালু করা সম্ভব কিনা সে বিষয়ে একটি প্রতিবেদন মূল কমিটির নিকট পেশ করার জন্য ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি সাব কমিটি গঠন করা হয়।
- সংসদীয় সাবকমিটি রেশম কারখানা দু’টি পরিদর্শণ করেন এবং রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র, রাজশাহী ৬ আসনের মাননীয় সাংসদ, বাংলাদেশ রেশম শিল্প মালিক সমিতি ও রেশম চাষীদের সাথে মত বিনিময় করেন।
- সংসদীয় সাব-কমিটি রাজশাহী রেশম কারখানাকে মডেল কারখানা হিসেবে চালু করার জন্য ও ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানা লিজের মাধ্যমে চালানোর সুপারিশ করে ২০/০৬/২০১০ তারিখে মুল কমিটির নিকট প্রতিবেদন দাখিল করেন।
- মন্ত্রণালয়ের ২৩/০৫/২০১০ তারিখের নির্দেশনা অনুযায়ী রাজশাহী রেশম কারখানা চালু করার জন্য ২৩ কোটি ৮১ লক্ষ টাকা ব্যয় সম্বলিত ৫ বছর মেয়াদী কর্মসূচী মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়।
- মন্ত্রণালয় কর্মসূচীটি রাজস্ব বাজেটের আওতায় বাস্তবায়নের জন্য বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী প্রাক্কলিত ব্যয় সর্বোচ্চ ১০ কোটি টাকা ও বাস্তবায়ন মেয়াদকাল ৩ বছর নির্দ্ধারণ করে পুনঃগঠিত কর্মসূচী প্রেরণের জন্য নির্দেশ দেয়।
- পুনরায় ০৩/১০/২০১০ তারিখে এডিপি পর্যালোচনা সভায় রাজশাহী রেশম কারখানা চালু করণ শীর্ষক কর্মসূচীটি রাজস্ব বাজেটের পরিবর্তে এডিপি হতে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া করনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
- এ প্রেক্ষিতে ২৬ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা ব্যয় সম্বলিত ৫ বছর মেয়াদী একটি ডিপিপি প্রস্তুত করা হয়েছে।
- ২৭/১০/২০১০ তারিখে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রী সভা কমিটির বৈঠকে বন্ধকৃত রাজশাহী রেশম কারখানা রেশম বোর্ডের নিয়ন্ত্রনে চালু করার প্রস্তাব মন্ত্রী সভা বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য Rules of Business মাফিক সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মতামত নিয়ে সারাংশ প্রণয়ন করা প্রয়োজন মর্মে সিদ্ধান- গৃহীত হয়।
- বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের ৪র্থ পর্ষদ সভায় রাজশাহী রেশম কারখানা চালুকরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ প্রেক্ষিতে গত ২২-১১-২০১৭ তারিখে ১টি এবং গত ২৭-০৭-২০১৮ তারিখে ৫টি সহ মোট ৬টি পাওয়ার লুমে পরীক্ষামূলকভাবে বস্ত্র বুনন কার্যক্রম চালু করা হয়। বর্তমানে মোট ১৯টি লুম বস্ত্র বুননের উপযোগী করা হয়েছে।
- রাজশাহী রেশম কারখানায় চাষীদের উৎপাদিত গুটি থেকে রেশম কাপড় যেমন ব্লক ও স্কীন প্রিন্টশাড়ী, গরদ শাড়ী, ডুপিয়ন, বলাকা এবং মটকা শার্টিং ইত্যাদি থান কাপড়, উত্তরীয়, টুপিস, হিজাব প্রভৃতি পণ্য তৈরী করা হচ্ছে।
- রাজশাহী রেশম কারখানার শো-রুমে উৎপাদিত রেশম বস্ত্র বিক্রয় করা হচ্ছে। এছাড়া Online এর মাধ্যমে ক্রয়ের সুযোগ রয়েছে। প্রয়োজনে www.silkbsdb.com ওয়েব সাইট ভিজিট করুন।